হাতীবান্ধায় বোমা মেশিনে বালু উত্তোলন, ভেঙ্গে যেতে বসেছে বাঁধ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ পারুলিয়ায় শিমুল তলা নামক এলাকায় তিস্তা নদীর বামতীরে বাঁধের পাশেই বোমা মেশিন দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দিনভর চলছে বালু উত্তোলনের মহা উৎসব। অবৈধভাবে এ বালু উত্তোলনের ফলে এক দিকে যেমন বাঁধ হুমকির মুখে, অন্যদিকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিন পারুলিয়া গ্রাম্রে শিমুলতলা এলাকায় বুড়িমারী ঢাকা মহা সড়কের পাশেই তিস্তা নদীর বাম তীরে বাঁধের পাশেই বোমা মেশিন বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। ওই এলাকার আব্দুর রশিদ ওরফে রশিদ হাজী নামে জনৈক ব্যক্তি এ বোমা মেশিন বসিয়ে বালু তুললেও এ বালু উত্তোলনের কলকাটি নাড়ার অভিযোগ উঠেছে তার ছোটভাই হাতীবান্ধা উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম তার বড়ভাইকে দিয়ে মুলত এ বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করেন। তবে বালু উত্তোলনে তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, বালু আমার বড়ভাই হাজী সাহেব উত্তোলন করছে। আমি ওই বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত নই।
ওই এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানাযায়, তিস্তানদীর বামতীরে বাঁধের পাশে অপরিকল্পিতভাবে বোমা মেশিন বসিয়ে গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলনের ফলে বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। আসছে বর্ষায় তিস্তার পানির তোরে ওই বাঁধ ভেঙ্গে গেলে কয়েক শতাধিক পরিবার তিস্তা নদীর গর্ভে বিলিন হওয়ার পাশাপাশি তিস্তা নদীর অদুরে বুড়িমারী-ঢাকা মহাসড়ক ভেঙ্গে যেতে পারে। বালু উত্তোলনের এ মহা উৎসবে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের নিরবতা নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন দেখা দিয়েছে। অথচ ওই এলাকায় পরিকল্পিত ব্যবস্থায় বালু উত্তোলন করা হলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবেন।

২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান বা নদ-নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। এ আইন অমান্য করলে সেই ব্যক্তি বা তাহাদের সহায়তাকারী কোন ব্যক্তির অনূর্ধ্ব ২ বৎসর কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা হইতে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন। এ ছাড়া এই আইনের অধীন অপরাধ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ভ্রাম্যমান আদালত বা বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচার করা যাবে।

এ প্রসঙ্গে বালু উত্তোলনকারী আব্দুর রশিদ বালু উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছি এবং করেই যাবো। এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনার যত ক্ষমতা আছে বালু উত্তোলন বন্ধ করার তা করেন। আর আমার যত ক্ষমতা আছে আমি বালু উত্তোলন করবো।

এ প্রসঙ্গে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, বিষটি আমার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *