হন্ডুরাসের প্রায় ৫৭ হাজার মানুষকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার ঘোষণা

২০২০ সালের ৫ জানুয়ারির মধ্যে হন্ডুরাসের প্রায় ৫৭ হাজার মানুষকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র । এ ঘোষণার পর হন্ডুরাস যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তকে ‘গভীর বেদনাদায়ক’ বলে মন্তব্য করেছে।

১৯৯৮ সালে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মিচ’ আঘাত হানে মধ্য আমেরিকার দেশ হন্ডুরাসে। ওই সময় দেশটির ৫৭ হাজার মানুষকে ‘টিপিএস’ (টেম্পোরারি প্রটেক্টেড স্ট্যাটাস) কর্মসূচির আওতায় আশ্রয় দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’র এক বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৯৮ সালের ওই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর হন্ডুরাসের ‘উল্লেখযোগ্য উন্নতি’ হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, এই ৫৭ হাজার মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে দেশে ফিরতে কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার বিকল্প ব্যবস্থা করতে পারে, সে জন্য ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

হন্ডুরাস সরকার যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তকে ‘গভীর বেদনাদায়ক’ বলে মন্তব্য করেছে। তবে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ওয়াশিংটনের সার্বভৌম অধিকারের মধ্যে পড়ে বলেও মনে করে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত হন্ডুরাসের রাষ্ট্রদূত মারলন তাবোরা জানান, এই ৫৭ হাজার মানুষের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করা তাঁদের জন্য কঠিন হবে। তিনি বলেন, এসব মানুষ পরিবার নিয়ে ২০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছে। এ অবস্থায় দেশে ফিরলে তাদের পুনর্বাসন করা খুব সহজ হবে না।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে আমরা শোকাহত। কিন্তু নিজেদের সার্বভৌমত্বের স্বার্থে তারা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতেই পারে।’

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্যারিবিয়ান রাষ্ট্র হাইতি এবং মধ্য আমেরিকার দেশ এলসালভেদরের অনেক মানুষকে ‘টিপিএস’-এর আওতায় আশ্রয় দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসন কয়েক মাসে ঘোষণা করেছে, তাদেরও দেশে ফেরত পাঠানো হবে। সমালোচকরা বলছেন, বিতাড়িত হয়ে এসব মানুষ নিজ দেশে ফিরে নানা ধরনের বিপদের মুখে পড়বে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন শুরু থেকে এ বিষয়টি উপেক্ষা করে আসছে। অনেকে আবার মনে করেন, টিপিএস কর্মসূচির মেয়াদ বারবার বাড়ানোও উচিত হবে না।

উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি হন্ডুরাসে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এ অস্থিরতার মুখে দেশটির অনেক মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়ছে, যাদের বেশির ভাগই জড়ো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে। সূত্র : বিবিসি।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *