সুষ্ঠু ভোট হলে এবার জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় যাবে – এরশাদ

সুষ্ঠু ভোট হলে এবার জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় যাবে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত সুষ্ঠু ভোট হলে এবার জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় যাবে। জাতীয় পার্টি আর কোনো দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবে না।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দলকে আরও সংগঠিত করতে হবে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি করতে হবে। শক্তি সঞ্চয় করতে হবে, কেউ ভোট ডাকাতি করতে চাইলে, জোর করে সিল মারতে চাইলে তাদের প্রতিহত করতে হবে।

মঙ্গলবার বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক সম্মেলন সিটির এক্সপো জোনে জাতীয় পার্টি আয়োজিত দু’দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তৃতায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এসব কথা বলেন। এর মধ্য দিয়ে দলটি তাদের নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের যাত্রা শুরু করল।

কর্মশালায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে আধুনিক ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর প্রচারণা নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা সংক্রান্ত একাধিক সেশন অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় সারা দেশ থেকে প্রায় তিন হাজার নেতাকর্মী অংশ নিচ্ছেন।

পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙা, আজম খান আলোচনায় অংশ নেন।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পার্টি চেয়ারম্যানের তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা শফিউল্লাহ আল মুনির। জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এরশাদ আরও বলেন, জাতীয় পার্টির নয় বছরের শাসনামল না এলে বাংলাদেশ অন্ধকারেই নিমজ্জিত থাকত। ব্রিটিশ বা পাকিস্তান আমলের অবস্থাতেই থেকে যেত বাংলাদেশ। তিনি বলেন, আমরা উন্নয়ন করেছি, আমরা লুটপাট করিনি। আমাদের দেশ পরিচালনায় খুন, গুম, সন্ত্রাস ছিল না।

এরশাদ বলেন, আমরা মানুষ খুন করিনি, আমাদের হাতে রক্তের দাগ নেই। তাই দেশের মানুষ আমাদের ভালোবাসে, মানুষ আবারও জাতীয় পার্টির শাসনামল ফিরে পেতে চায়। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর প্রচারণায় আমরা সাধারণ মানুষের কাছে যাব।

নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করব। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করব, মানুষের মুখে হাসি ফোটাব আমরাই।’ ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর থেকে অমানুষিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, ‘আমার মতো নির্যাতিত নেতা আর কেউ নেই। এত নির্যাতনের পরও শুধু আল্লাহর রহমত আর মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে আছি। মানুষ আমাদের ভুলে যায়নি, আমরা ক্ষমতায় যেতে এখন প্রস্তুত।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে ৫০৮৮টি এবং আওয়ামী লীগ ৬০০০ মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু আমার নামের মামলাগুলো এখনও আছে। কারণ জাতীয় পার্টিকে সবাই ভয় পায়, সাধারণ মানুষের মাঝে জাতীয় পার্টির শক্তিশালী অবস্থান আছে।’

জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বন ও পরিবেশমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এমএ সাত্তার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, মো. হাফিজ উদ্দিন, সৈয়দ আবদুল মান্নান, মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, সুনীল শুভরায়, নাসরিন জাহান রত্না এমপি, এসএম ফয়সল চিশতী, মেজর (অব.) খালেদ আকতার, সোলায়মান আলম শেঠ, এম রশিদ, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, শামিম হায়দার পাটোয়ারী।

এছাড়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুক, বিএনএ চেয়ারম্যান সেকান্দার আলী মনি উপস্থিত ছিলেন।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *