রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিয়ানমার আদালতের অভিযোগ গঠনের নির্দেশ

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনে অভিযোগ গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে মিয়ানমারের একটি আদালত। সোমবার তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে তাদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেন ইয়াঙ্গুনের জেলা আদালত। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও দ্য ব্যাংকক পোস্ট।

খবরে বলা হয়, প্রায় ছয় মাস শুনানী শেষে বিচারক ইয়ে লয়িন সোমবার রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনে সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) এবং কিয়াও সো ও (২৮) বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে তাদের বিচার শুরুর আদেশ দেন। তবে রয়টার্সের সাংবাদিকরা সোমবারও আদালতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। ঔপনিবেশিক আমলের ওই আইনে দোষী সাব্যস্ত করা হলে তাদের ১৪ বছর পর্যন্ত কারাগারে কাটাতে হতে পারে।

প্রায় সাত মাস ধরে রয়টার্সের ওই দুই সাংবাদিককে আটক করে রাখা হয়েছে। রয়টার্সের ভাষ্যমতে, তারা কেবল সাংবাদিক হিসেবে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সেনাবাহিনীর নির্যাতন নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির কাজ করছিল।

রয়টার্স আদালতের প্রতি, তাদের সাংবাদিকদের মুক্ত করে দেওয়ার আহবান জানিয়েছে। কিন্তু আদালতে সে আহবান উপেক্ষা করে গেছে। আদালত জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের কাছে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিচারকার্য শুরু করার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।

উল্লেখ্য, এই দুই সাংবাদিককে গত ডিসেম্বরে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, তাদের কাছে রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান নিয়ে ফাঁস হওয়া গুরুত্বপূর্ণ স্পর্শকাতর তথ্য ছিল।

মানবাধিকার সংগঠন ও বৈদেশিক পর্যবেক্ষকরা তাদের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। ওই দুই সাংবাদিকের দাবি, পুলিশ তাদেরকে ভুয়া অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। এমনকি আদালতেও ওই অভিযোগ অনুসারে তথ্য সাজানো হয়েছে।

উভয় সাংবাদিকই মিয়ানমারের নাগরিক। গ্রেফতারের আগে তারা রাখাইনের ইন দিন গ্রামে ১০ রোহিঙ্গা মুসলিমদের নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত করছিলেন।

ওয়া লোন আদালতে হাজির হওয়ার পর সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে করে একটি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ‘থাম্বস আপ’ দেখিয়েছেন। তিনি রায়ের পড়ে বলেন, আমাদের মামলা লড়ার অধিকার আছে। আদালত আমাদের দোষী সাব্যস্ত করেনি।

তিনি আরো বলেন, আমরা সাংবাদিকতার নীতি মেনে তদন্ত করে এই ঘটনা উদঘাটন করেছি। আমরা হাল ছাড়ছি না।

প্রসঙ্গত, গত বছর রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতা থেকে বাঁচতে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *