রোহিঙ্গাদের দেখতে বাংলাদেশে আসছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও তাদের মুখ থেকে নির্যাতনের কথা শুনতে দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো।

তাঁকে স্বাগত জানাতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আজ শনিবার বিকাল ৫টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন ।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গতবছর ২৫ অগাস্ট নতুন করে দমন অভিযান শুরুর পর প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে তাদের কাছ থেকে।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট কক্সবাজারে গিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন এবং তাদের মুখ থেকে সেই ভয়াবহতার কথা শুনবেন।

লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় ও জরুরি সহায়তা দিয়ে যে ভূমিকা বাংলাদেশ রেখেছে, তার প্রতি সংহতি জানিয়ে গত সেপ্টেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদিকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট উইদোদো।

ওই সফরে মারসুদি রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সম্প্রতি যে চুক্তি করেছে, সেখানে দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরুর লক্ষ্য ঠিক করেছিল দুই দেশ। কিন্তু রোহিঙ্গা পরিবারের তালিকা তৈরি ও যাচাইয়ের কাজ শেষ না হওয়ায় ওই সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি।

এদিকে রাখাইন রাজ্যের অস্থিরতা এখনও প্রশমিত না হওয়ায় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন প্রত্যাবাসন এখনই শুরু না করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

তাদের আশঙ্কা, তাড়াহুড়ো করা হলে রাখাইনে ফেরার পর রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নাও হতে পারে।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট ঢাকা পৌঁছানোর পর রোববার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরে ধানমণ্ডিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিও তিনি শ্রদ্ধা জানাবেন।

কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে রোববারই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট। রাতে ঢাকায় ফিরেই তিনি জাকার্তার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।

ইন্দোনেশিয়ার জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী অরচন্দ্র তাহার সম্প্রতি জাকার্তায় সাংবাদিকদের ইংগিত দিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর এবারের বাংলাদেশ সফরে ইন্দোনেশিয়া থেকে এলএনজি আমদানির একটি চুক্তি হতে পারে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ার পরিসংখ্যান দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে দুই দেশের মধ্যে ১.৩৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়, যেখানে ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানির পরিমাণই ছিল ১.১৯ বিলিয়ন ডলার।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *