মোশাররফ করিম ক্ষমা চাইলেন

মোশাররফ করিম ক্ষমা চাইলেন

মোশাররফ করিম ক্ষমা চাইলেন

‘জাগো বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে মানুষকে সচেতন করার আহ্বান জানাতে গিয়ে উল্টো নিজেই সমস্যার মুখোমুখি হলেন ছোট ও বড় পর্দার তারকা মোশাররফ করিম। তোপের মুখে পড়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়ে মোশাররফ করিম দুঃখ প্রকাশ করার বিষয়টি ভক্তদের কাছে পরিষ্কার করেন।

সামাজিক নানা সমস্যা নিয়ে নির্মিত ‘জাগো বাংলাদেশ’-এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কোনো টিভি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন মোশাররফ করিম। তবে অনুষ্ঠানটিকে শুধু উপস্থাপনা নয়, নিজের সামাজিক দায়িত্ব মনে করছেন এই অভিনেতা। তা না হলে নাকি অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করতেন না তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘টেডএক্স’ ও ভারতের ‘সত্যমেভ জয়তে’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশের চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরে প্রচারিত হচ্ছে ‘জাগো বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানটি। প্রাথমিকভাবে অনুষ্ঠানটির ১৩ পর্ব ধারণ করা হয়েছে। যেসব বিষয় নিয়ে পর্বগুলো নির্মিত হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বাল্যবিবাহ, সড়ক দুর্ঘটনা, অটিজম, যানজট, মেয়েদের ঋতুকালীন সমস্যা, শিশু ধর্ষণ, বৃহন্নলা ও পরিবেশদূষণ। ১১ মার্চ থেকে সপ্তাহের প্রতি রোববার রাত সাড়ে আটটায় চ্যানেল টুয়েন্টিফোরে দেখানো হচ্ছে অনুষ্ঠানটি। ১৮ মার্চ অনুষ্ঠানটির দ্বিতীয় পর্ব প্রচারের পর তোপের মুখে পড়েন মোশাররফ করিম। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘একটা মেয়ে তাঁর পছন্দমতো পোশাক পরবে না? আচ্ছা পোশাক পরলেই যদি প্রবলেম হয়, তাহলে সাত বছরের মেয়েটির ক্ষেত্রে কী যুক্তি দেব, যে বেরাকা পরেছিলেন তাঁর ক্ষেত্রে কী যুক্তি দেব? কোনো যুক্তি আছে?’ এটি প্রচারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মোশাররফ করিমকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

তবে বিষয়টি নিয়ে আজ শুক্রবার মোশাররফ করিমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে বলব, আগে পুরো অনুষ্ঠান দেখুন। যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁরা হয়তো পুরো অনুষ্ঠানটি দেখেননি। পুরো বক্তব্য না বুঝেই দোষারোপ করছেন।’

অনেকে আবার মোশাররফ করিমের এ বক্তব্যকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বলে মনে করছেন। আর তাতে মর্মাহত জনপ্রিয় এই অভিনেতা। তাই ভক্তদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করতে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরে আমার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের একটি অংশে আমার কথায় অনেকে আহত হয়েছেন। আমি অত্যন্ত দুঃখিত। আমি যা বলতে চেয়েছি, তা হয়তো পরিষ্কার হয়নি। আমি পোশাকের শালীনতায় বিশ্বাসী এবং তার প্রয়োজন আছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা আমার অভিপ্রায় না। এ ভুল অনিচ্ছাকৃত। আমি দুঃখিত। দয়া করে সবাই ক্ষমা করবেন।’

এদিকে মোশাররফ করিমের এমন ক্ষমা চাওয়াকে সমর্থন করেননি ‘জাগো বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানের নির্মাতা আরিফ এ আহনাফ। তিনি বলেন, ‘মোশাররফ করিমের উচিত ছিল, সবাইকে ভালো করে অনুষ্ঠানটি দেখতে বলা। যাঁরা পুরো অনুষ্ঠান দেখেননি, তাঁরা আংশিক দেখে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। আমরা শুধু বলেছি, নারীরা নির্যাতিত হলে শুধু পোশাককে দোষ দেওয়া ঠিক না। এ ক্ষেত্রে দায়ী মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি। মানুষের মনকে আগে ঠিক করা প্রয়োজন। আমি সবাইকে বিনয়ের সঙ্গে ৩৪ মিনিটের পুরো অনুষ্ঠান দেখে বিচার-বিবেচনা করতে বলব। এখানে কোনোভাবেই ধর্ম বা কোনো সম্প্রদায়কে আঘাত করা হয়নি।’

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *