মাস্টার ছাড়াই চলছে হিলি রেল স্টেশন!

লুৎফর রহমান, হিলি: মাস্টার ছাড়াই চলছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর দিনাজপুরের হিলি রেল স্টেশনের সব ধরনের কার্যক্রম। এছাড়া জনবলের অভাবে অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই রেল স্টেশনটি। এতে করে দুর্ভোগে পড়ছে হিলির রেল যাত্রীরা, ব্যঘাত ঘটছে রেল চলাচলের। সেই সঙ্গে যেকোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

হিলি রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, এই স্টেশনটি ‘বি’ শ্রেণির। এ ধরনের স্টেশনে তিন জন মাস্টার, পাঁচ জন পয়েন্টম্যান, তিন জন বুকিং সহকারী এবং দুই জন পোর্টার থাকার বিধান রয়েছে। কিন্তু হিলি রেল স্টেশনে বর্তমানে রয়েছে মাত্র একজন পয়েন্টম্যান। তিনিও স্টেশনের যন্ত্রপাতি এবং রেলক্রসিং পাহারা দিচ্ছেন। সরেজমিনে হিলি রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, রেল স্টেশনটি ফাঁকা পড়ে রয়েছে।

হিলি রেল স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন রাজশাহীগামী আন্তঃনগর ররেন্দ্র এক্সপ্রেস, তিতুমীর এক্সপ্রেস এবং খুলনাগামী রকেট মেইল ট্রেন যাত্রা বিরতি করে। এছাড়া এ পথ দিয়ে প্রতিদিন আরও ছয় জোড়া ট্রেন যাওয়া আসা করে। বর্তমানে হিলি স্টেশন দিয়ে চলাচলকারী সব ট্রেন দুই নম্বর লাইন দিয়ে চলাচল করছে। হিলি থেকে বিরামপুরে সদ্য বদলি হওয়া সহকারী স্টেশন মাস্টার রুহুল আমিন বলেন, ‘যোগদানের পর থেকেই হিলি রেল স্টেশনে আমিসহ আরেকজন মিলে দায়িত্ব পালন করে আসছিলাম। এর মধ্যে গত ডিসেম্বরে ওই স্টেশন মাস্টার অবসরে যান। এরপর থেকে একাই দায়িত্ব পালন করে আসছি। কিন্তু প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে হিলি রেল স্টেশন অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়ে ওই স্টেশনের সব কার্যক্রম পাশের বিরামপুর ও পাঁচবিবি স্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ কারণে গত ৮ জানুয়ারি আমাকে হিলি থেকে বিরামপুর স্টেশনে বদলি করা হয়েছে।

হিলি রেল স্টেশনের দায়ীত্বরত পয়েন্টম্যান মীর আলম বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী দিনে তিন জন এবং রাতে দুই জন পয়েন্টম্যান থাকার কথা। কিন্তু যোগদান করার পর গত আট বছর থেকে মোট তিন জন পয়েন্টম্যান দেখছি। পরে সেখান থেকেও একজনকে কমিয়ে দুই জন পয়েন্টম্যানকে দায়ীত্ব দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, ‘দুদিন আগে স্টেশন মাস্টার ও একজন পয়েন্টম্যানকে বদলি করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে করে বর্তমানে হিলিতে কোনও জনবল নেই। আমি শুধু একাই রয়েছি এখানে। স্টেশন মাস্টার না থাকায় বিরামপুর এবং পাঁচবিবির মধ্যে ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে ট্রেন চলাচল করছে। যার ফলে ওই তিনটি ট্রেন প্লাটফর্মে না থামিয়ে বর্তমানে মাঝের লাইনে থামছে। এতে করে যাত্রীদের ওঠানামায় এবং পণ্য পরিবহনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়াও কোনও টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীর সংখ্যাও কমে গেছে।
হিলি রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম বলেন, ‘হিলি রেল স্টেশনটি সীমান্ত সংলগ্ন। তাই নিরাপত্তার জন্য সবসময় সেখানে স্টেশন মাস্টার থাকা জরুরি। এছাড়াও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম হিলি স্থলবন্দর রয়েছে এখানে। যার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক ব্যবসায়ী প্রতিদিন এখানে আসে। এই রেল স্টেশনের অনেক গুরুত্ব রয়েছে, তাই কর্তৃপক্ষ দ্রæত এখানে মাস্টার নিয়োগ দিয়ে স্টেশনটি চালু করবে বলে আশা করছি।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *