মনিরামপুরের ফায়ার সার্ভিসের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ।

যশোর প্রতিনিধি ঃ
যশোরের মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ ও ফায়ার ম্যানের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দেশের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবতার সেবায় নিয়োজিত করেছেন। যেমনঃ অগ্নি সংযোগ, সড়ক দূর্ঘটনা, বজ্রপাত, সহ সকল ধরনের জরুরী দূর্ঘটনার উদ্ধার কাজে নিয়োজিত আত্ত নিয়োগ কর্মী হিসাবে কাজ করবে তারা। উপজেলার মনিরামপুর, কামালপুর, জয়পুর, মোহনপুর, আলীপুর, সাতনল, রাজগঞ্জ, সিলামপুর, সাতগাতী ও মাছনা গ্রামের বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে সরেজমিনে কথা বলে পাওয়া তথ্য।

মাছনা গ্রামের কামরুজ্জামান (২৬) বলেন, ঈদের পরের দিন সকাল ১০ টায় তার স্ত্রী প্রসব বেদনায় ছটফ্ট করছিলেন। প্রচন্ড ব্লিডিং হওয়ার কারনে রোগীর অবস্থা খুব খারাপ হওায় জরুরী ভাবে মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিসে ফোন করে তাদের কাছে জরুরী এ্যাম্বুলেন্স সেবা পেতে যোগাযোগ করি। কিন্তু তারা জানান সড়ক দূর্ঘটনা আর বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হওয়া রোগী ছাড়া তারা বহন করে না। এবিষয়ে আরো অভিযোগ করেন একই গ্রামের আর্জিনা বেগম (৩৫), শাহিদা খাতুন (২৫), শহর বানু (৪৬), আনোয়ারা বেগম (৫৫), রুবিলা খাতুন (৯০) সহ আরো অনেকে।

জয়পুর গুপের বাজারে আসাদ সাইকেল ষ্টোরের আসাদুজ্জামান (৪৫) জানান, তিনি পেশায় একজন সাইকেল মিস্ত্রী। কিš‘ পাশা-পাশি সপ্তাহে ৫-৭ লিটার করে পেট্রোল বিক্রি করেন তার দোকানে। তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়িতে করে দুইজন লোক ফায়ারম্যান ও স্টেশন অফিসার পরিচয়ে এসে বলেন যে দোকানে লাইসেন্স না করলে মামলার হুমকি দেয় তারা। আর লাইসেন্স করতে খরচ হবে ৮-১০ হাজার টাকা। একই অভিযোগ করেন ঐ বাজারের মুদি দোকানদার মোকাদ্দেস হোসেন (৪০) ও জামসেদ আলী (৫৫)।

সাতনল বাজারের তামিম মশলা চানাচুরের আলমগীর হোসেন (৪০) বলেন, মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের দুইটা লোক মটরসাইকেলে এসে বলেন আমার দোকানে লাইন্সেস করতে হবে। আমি বললাম ইউনিয়ন পরিষদ থেকেতো আমার ট্রের্ড লাইসেন্স করা আছে। তারা বলেন আমাদের কাছে না করলে হবে না। এবং সাথে অগ্নি নির্বাপক বোতল কেনার কথা বলেন। আমি তাদের কাছে সময় চাইলে তারা তেল খরচ বাবদ ৫০০ টাকা নিয়ে চলে যায়। এছাড়া তারা ডিউটি বাদ দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে রেশনের চাউল বেচতে যায় কেশবপুর বাজারে। ইটের ভাটা সহ বিভিন্ন দোকানে অগ্নিনির্বাপক বোতল বিক্রি করে অবৈধ ভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এই দুই কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) সালাউদ্দিন ও ফায়ারম্যান হুমায়ুন কবির।

মোহনপুরের আফরোজা রহমান ও ব্রাক সংস্থায় চাকুরীজীবি অন্তসত্তা হাবিবা রহমান জানান ঈদের আগের দিন রাতে অন্তসত্তা হাবিবার অবস্থার অবনতি দেখা দিলে চারি দিকে খোঁজাখুজি করে কোন গাড়ী না পেয়ে পাশের বাড়ীর এক বড় ভাইয়ের পরামর্শে মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে এসে তাদের অবস্থার কথা ও মহিলা হিসাবে নিরাপত্তার কথা তাদের খুলে বলেন। তারা বলেন তাদের স্বামীরা বাইরে চাকুরী করেন বাসায় কোন পুরুষ মানুষ নেই তাই আমাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এখান থেকে এ্যাম্বুলেন্স নিতে এসেছি। কিন্তু  ডিউটি রত এক কর্মী বলেন স্যারকে জানাতে হবে। তারা অফিসার ইনচার্জ সালাউদ্দিন মিয়ার কাছে গিয়ে বিষয়টি খুলে বললেও কোন গুরুত্ব না দিয়ে বলেন গাড়ি দেওয়া যাবে না। তারা আরো বলেন স্যার আপনাদের সরকারী নিয়মে যে ভাবে ভাড়া দেওয়ার আছে আমরা ও সে ভাবে ভাড়া দেবো। কিন্তু তারা আমাদের অন্যকোন গাড়ী ঠিক করে যশোর যেতে বলেন। আমরা ভাবলাম ড্রাইভার নেই কিন্তু  সবাই টেলিভিশন রুমে বসে সিনেমা দেখছে। বাইরে দুইটি বড় গাড়ি ও একটি সাদা লাল রংঙের এ্যাম্বুলেন্স রাখা ছিলো। উপায় না পেয়ে বাজারে এসে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরে এক ব্যবসায়ী দাদা তার দোকানের আরএফএল কোম্পানির মালামাল তার ইজিবাইক থেকে নামিয়ে রেখে ঐ গাড়িতে করে আমাদের যশোর যেতে সাহায্য করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ করে বলেন সরকার ও উদ্ধাত্তন কর্মকর্তাদের কাছে আমাদের দাবী এসমস্ত সেবা তারা বন্ধ করে দিক। তা না হলে এদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক।

 

 

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *