বেগম জিয়াকে সুচিকিৎসা নিতে দিচ্ছেনা সরকার: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার বেগম জিয়ার গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে তাচ্ছিল্য করছে। সহমর্মিতা, অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, অন্যকে মর্যাদাদান, এদের ঐতিহ্যে নেই। মনুষ্যত্বের সকল চিহ্ন এরা মুছে ফেলেছে। সেজন্য রাজনৈতিক বিরোধীদের ধরাতল থেকে অদৃশ্য করা, বন্দুক যুদ্ধের নামে হত্যা করা, শারীরিক ক্ষতি, মিথ্যা মামলা, নির্বিচারে গ্রেফতার, ব্যাপকভাবে নির্যাতন, নারকীয় অত্যাচার, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজা, আটক, আইন ও শৃঙ্খলার নামে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কণ্ঠরোধ ইত্যাদির মাধ্যমে সরকার দেশ ও সারা দুনিয়ায় একটি অবৈধ কর্তৃপক্ষে পরিণত হয়েছে।

রিজভী বলেন, এই মুহুর্তে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। ইউনাইটেড হাসপাতালে তার যথাযথ চিকিৎসা দিতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ক্ষমতা থেকে সরে গিয়ে তত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। নইলে লেট ক্লিয়ারিং এর জন্য অনেক বেশি ডেমারেজ দিতে হবে।

মঙ্গলবার নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, চিকিৎসাকে বিলম্বিত করার জন্য মন্ত্রীদের দিয়ে নানা কাহিনী শোনানো হচ্ছে মানুষকে। এখন শুধু কারা কর্তৃপক্ষই নয় এর সাথে যুক্ত হয়েছে সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী, সেতু ও যোগাযোগমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তারা এমন কথা বলছেন, যেন বেগম খালেদা জিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হলে তাতে মনে হয় মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে। বারবার কারাবিধির কথা বলে মন্ত্রীরা বেগম জিয়াকে তার যথাযথ চিকিৎসা নিতে বিষয়টিকে গায়ের জোরে আটকাতে চাচ্ছে। কারাবিধি নিয়ে মন্ত্রীদের কথায় মনে হয় তারা যেন ধর্মীয় বাণী আওড়াচ্ছেন যেটির বরখেলাপ হলে মহাপাপ হয়ে যাবে।

রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চান এইজন্য যে, ইতিপূর্বে তিনি সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, উন্নতমানের পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি-যেগুলো সুযোগ ইউনাইটেড হাসপাতালে রয়েছে বলেই তিনি সেখানে চিকিৎসা করাতে চান। রোগী সাধারণতঃ আস্থাভাজন চিকিৎসকের কাছেই যেতে চান। আস্থা তৈরি হয় চিকিৎসক কর্তৃক রোগীর আরোগ্য হওয়া, এরপর সেই চিকিৎসকের কাছে বারবার ফলোআপ ইত্যাদির কারণে।

তিনি বলেন, অতীত অভিজ্ঞতার আলোকেই রোগী তার আস্থাভাজন চিকিৎসক ও হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল হন। যেমন রাষ্ট্রপতি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন সিঙ্গাপুর অথবা লন্ডনে গিয়ে চিকিৎসা করার- রাষ্ট্রের যত টাকা খরচ হোক না কেনো। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া নিজ দেশেরই একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চাচ্ছেন যেখানে তার যথাযথ চিকিৎসা হবে বলে তিনি মনে করেন। আর এই জন্যই রাষ্ট্রের কোনো টাকা লাগবে না – তার আত্মীয়-স্বজনরাই চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে বলে সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছেন।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *