নোম্যানস ল্যান্ডে ১৪৪ ধারা জারি, আতঙ্কে সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গা

নোম্যানস ল্যান্ড ও তুমব্রুসংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে। এখানে আশ্রয় নেয়া সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গার দিন কাটাচ্ছে আতঙ্কে। রোববার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সীমান্ত ঘেঁষা সড়কে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বিজিপির টহল জোরদারের পাশাপাশি কয়েক দফা মাইকিং করা হয়েছে। নোম্যানস ল্যান্ড ও তুমব্রুসংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে।

সকাল থেকে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে সেনা-বিজিপি সদস্যদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান করতে দেখা গেছে। সীমান্তের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় পিকআপ ভ্যান ও মোটরসাইকেলযোগে তারা টহল দিচ্ছে। নোম্যানস ল্যান্ড থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়াতে ভয়ভীতি অব্যাহত রেখেছে সেনা ও সীমান্তরক্ষী বিজিপির সদস্যরা।

নতুন করে রোহিঙ্গাদের ঠেলে দেয়ার অপচেষ্টা রুখতে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) সদস্যরা সীমান্তে সতর্কাবস্থায় রয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে টহলও বাড়িয়েছে বিজিবি। বিজিবির তুমব্রু ক্যাম্প কমান্ডার আবদুল হাকিম জানান, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের সেনা-বিজিপির নোম্যানস ল্যান্ড থেকে রোহিঙ্গাদের চলে যেতে মাইকিং করছে। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে টহল দিতে দেখা যাচ্ছে। তবে মিয়ানমারের অভ্যন্তরেই তারা সবকিছু করছে। সীমান্তের এপারে কোনো ঝামেলা নেই। বিজিবি সর্বদা সতর্কাবস্থায় রয়েছে।

কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর ইকবাল আহমদ বলেন, রোববারও মাইকিং করে রোহিঙ্গাদের অন্যত্র সরে যেতে বলেছে বিজিপি। তিনি বলেন, বিজিবি সীমান্তে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে।

নোম্যানস ল্যান্ডের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দলনেতা নূর হোসেন বলেন, নোম্যানস ল্যান্ড থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়াতে মিয়ানমারের সেনা-বিজিপি সদস্যরা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। কিছুক্ষণ পরপর মাইকিং করে চলে যেতে বলছে। শনিবার রাতে মদের খালি বোতল ছুড়ে মেরেছে ক্যাম্পে। অস্ত্র নিয়ে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে ঘোরাঘুরি করছে সেনারা। এতে সেখানকার রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

রোহিঙ্গা আবুল শামা জানান, তারা রাখাইনে ফিরে যেতে পারছেন না আবার বাংলাদেশেও ঢুকতে পারছেন না। তিনি বলেন, এ অবস্থায় বিজিপি আবার প্রায় সময় তাদের অন্যত্র সরিয়ে যেতে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, নোম্যানস ল্যান্ড থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার জন্য মিয়ানমারের সেনা-বিজিপি সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। সেখানে ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে এবং কিছুক্ষণ পরপর সেখান থেকে চলে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। এসবের মধ্যে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে রোহিঙ্গারা। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে সীমান্ত অঞ্চলের মানুষদের মাঝেও।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *