ধর্মের নামে অধর্ম চর্চা বন্ধ করবে মডেল মসজিদ: প্রধানমন্ত্রী
ধর্মের নামে অধর্ম চর্চা বন্ধ করবে মডেল মসজিদ বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া মডেল মসজিদগুলো ইসলামের জ্ঞান ও মূল্যবোধ বাড়াতেও কাজ করবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমরা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করছি, ইসলাম ধর্ম যাতে আরও উন্নতভাবে পালন করতে পারে। ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা যাতে পায়। ইসলামের মূল্যবোধের প্রচার ও প্রসার যেন ঘটে।
সোমবার দেশের ৩১টি জেলায় আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব মসজিদের উদ্বোধন করেন তিনি।
ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আলেমরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু গড়ার কাজ শুরু করেন। মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে তিনি মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। তার সময়েই ওআইসি ভুক্ত হয় দেশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদে ধর্মের বদনাম হয়; বিষয়টি নতুন প্রজন্মকে বোঝাতে মডেল মসজিদগুলোর মাধ্যমে ইমামরা ভূমিকা রাখতে পারেন।
তিনি বলেন, ইসলামের সঠিক চর্চার মাধ্যমে সমাজের সব অসঙ্গতি দূর করে এগিয়ে যেতে হবে। সব ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতেই কাজ করছে বর্তমান সরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ার কাজ শুরু করেন বঙ্গবন্ধু। মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে তিনি মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। তার সময়েই ওআইসির সদস্য হয় বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুই ইসলামিক ফাউন্ডেশেন ও ইসলামিক বোর্ড গঠন করেন।
বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যে তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা হচ্ছে সেটিও তিনি দেশে নিয়ে আসেন এবং সেখানে জায়গা ঠিক করে দেন।
মসজিদের বয়ানে মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বলার জন্য ইমামদের অনুরোধ জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে যাতে আমাদের সন্তানরা না জড়ায় এ জন্য আপনারা এসবের কুফল তুলে ধরবেন। আমরা চাই, ইসলামের সঠিক শিক্ষা সন্তানরা যেন পায়। আমরা চাই, এদেশে প্রতিটি মানুষ যেন নিরাপদে তাদের ধর্ম পালন করতে পারে এটাই ইসলামের শিক্ষা।
ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ ধর্ম প্রচারের সরকারি উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যেন সঠিকপথে দেশকে এগিয়ে নিতে পারি, সে চেষ্টা করছি। আওয়ামী লীগ সব সময় ইসলামের খেদমত করে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে যুক্ত হওয়া ঠেকাতে ইমামদের সচেতনতা তৈরির আহ্বান জানান তিনি।
উদ্বোধন করা মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে: ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও নগরকান্দা, গাজীপুরের কাপাসিয়া, গোপালগঞ্জের সদর উপজেলা, কিশোরগঞ্জের সদর ও কটিয়াদি, মানিকগঞ্জের ঘিওর ও সাটুরিয়া, নরসিংদীর সদর উপজেলা ও মনোহরদি, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ও জেলা সদর, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা, বগুড়ার ধুনট ও নন্দীগ্রাম, নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলা, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা।
এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলা, পাবনার ভাঙ্গুরা, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া, ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলা, শেরপুর সদর, পিরোজপুর সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর ও কসবা, খাগড়াছড়ির সদর ও মানিকছড়ি, কুমিল্লার চান্দিনা ও চৌদ্দগ্রাম, খুলনার রূপসা, কুষ্টিয়ার খোকশা ও ভেড়ামারা, মেহেরপুর জেলা সদর ও গাংনী, সাতক্ষীরার দেবহাটা, সিলেটের গোয়াইনঘাট, সুনামগঞ্জ জেলা সদর ও জগন্নাথপুর এবং হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায়।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের ১০ জুন সারা দেশে একযোগে মোট ৫৬৪টির মধ্যে ৫০টি মডেল মসজিদের প্রথম ধাপের উদ্বোধন করেন।