চৌগাছায় যে স্কুলের সকল শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধী ।
রেজাউল ইসলাম চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা ।
যশোরের চৌগাছায় যে স্কুলের সকল শিক্ষার্থীই প্রতিবন্ধী। গ্রামীন উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি সমাজ সেবা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে গড়েতুলা হয়েছে এই স্কুল। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রতিবন্ধিদের আলোর মুখদেখাতে ও সমাজ উন্নয়ে তাদের অবদান রাখতে আশরাফ ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছেন।
এ প্রতিবন্ধী স্কুলটি চৌগাছা-যশোর রোডে সরকারি হাসপাতালের সামনে অবস্থিত। এখানে পরম স্নেুহ ও মমতা বন্ধনের শিশু প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা প্রদান করা হয়। বিভিন্ন খেলনা সামগ্রী, ষ্টান্ডিং ফ্রেম, ওয়াকার, প্যারালাল বার, ফিজিওথেরাপিষ্টের, স্পেশাল বেবী চেয়ার, হুইল চেয়ার দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ডে-কেয়ার সেন্টার। এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে ১৭৫ জন।
২০০৫ সাল হতে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ও পূর্ণবাসন স্কুল কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও চিকিৎসা পেলে প্রতিবন্ধীরাও আর দশজন মানুষের মত কাজ করতে পারবে। প্রতিবন্ধীদের উন্নয়ন ও পূর্ণবাসন কার্যক্রমের মধ্যে শিশু প্রতিবন্ধীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের কার্যক্রমটি জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাযায় শুন্য থেকে ২৫ বছর বয়সী শিশু- কিশোর প্রতিবন্ধীদের সমাজের মূল স্রোতধার সাথে সম্পৃক্ত করতে স্কুল ভিত্তীক শিক্ষা প্রদান করে চলেছে এ প্রতিষ্ঠানটি। নিজ পরিবারেও যাতে এসব শিশুরা অবজ্ঞা কিংবা অবহেলার শিকার না হয় সে জন্য তাদের অভিভাবকদেরও নিয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন তারা। বিশেজ্ঞ শিক্ষকদের দ্বারা শিশু প্রতিবন্ধীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার বিশেষ ক্লাশ নেওয়া হয়।
১৯৯১ সাল থেকে গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা বঞ্চিত মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, নিরাপদ পানি, আতœকর্মসংস্থান, নারী ক্ষমতায়নসহ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। তারা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ও পূর্ণবাসন, শিশু শিক্ষা, মানবাধিকার ও আইন সহায়তা শিক্ষা, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধ, মৎস্য চাষ উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, ভুমি অধিকার, কৃষি প্রযুক্তি হস্তান্তর, ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম, পানি নিষ্কাশন, সামাজিক বনায়ন, এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ, সাংস্কৃতিক, হস্ত শিল্প ও লোকাল গভার্নেন্স প্রকল্প।
রবিবার সরেজমিনে স্কুলটিতে গেলে কথা হয় উপজেলার লস্কার পুর গ্রামের মর্তেজ আলীর ছেলে প্রতিবন্ধী লিটন হোসেন (১৬), উত্তর কয়ারপাড়া গ্রামের মশিয়ার রহমানের ছেলে ইসমাঈল হোসেন (১৬), বেড়গবিন্দপুর গ্রামের মহব্বত আলীর মেয়ে ফারজানা মিতা (১৭), মশ্যমপুর গ্রামের মোস্তফার ছেলে মইন উদ্দীন (১৭)। মা রন্জুয়ারা বেগম, রিনা বেগম, খুরশিদা বেগম ও ফাতেমা বেগম জানান, এ স্কুলে এসে তাদের ছেলেমেয়েদের শারিরীক ও মানুষীক দিক দিয়ে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।
এ স্কুলেটির শিক্ষক জিএম জাকারিয়া হাসনাত জানান, তারা শুধু চৌগাছাতেই ১৬৫ জন প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ¯ু‹লটির পরিচালক এম মাহ্Ÿুবুল আশরাফ বাবলু জানান শহরের প্রতিবন্ধীরা বিভিন্ন চিকিৎসা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে আত্মনির্ভরশীল হচ্ছে। এক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলের চিত্র ভিন্ন । তাই গ্রামের হতদরিদ্র পিছিয়ে পড়া প্রতিবন্ধীরা যাতে সমাজের বোঝা না হয় সেই জন্য তাদেও আত্মকর্ম সংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে এ স্কুল তৈরী করা হয়েছে।
জে- থার্টিন,খুলনা ।