কুড়িগ্রামে শৈত্য প্রবাহে চরম দুর্ভোগে হত-দরিদ্র মানুষ
শাহ্ আলম, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে টানা শৈত্য প্রবাহে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত হয়ে পড়েছে। কুড়িগ্রামের কৃষি আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক জাকির হোসেন জানান, শনিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আর শুক্রবার জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৭.১ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার তাপমাত্রা বেশি নিম্নগামী ও শৈত্য প্রবাহ দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে হত-দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের। কনকনে ঠান্ডা আর হিমেল হাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। বাড়ছে শীত জনিত রোগের প্রকোপ। বিশেষ করে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, হার্ডের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে।
দুপুরের পর সামান্য সময়ের জন্য সুর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ ছড়াতে না পাড়ায় দিনের বেলায়ও তাপমাত্রা বাড়ছে না। এ অবস্থায় সন্ধার পর থেকে বৃষ্টির ফোটার মতো টপ টপ করে পড়ছে কুশায়া। কুয়াশার পানিতে ভিজে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট। এ অবস্থায় গরম কাপড়ের অভাবে খর-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা চলছে সর্বত্রই। বিশেষ করে কৃষি শ্রমিকরা কাজে যেতে না পারায় বিলম্বিত হচ্ছে চাষাবাদ। খাদ্য সংকটে পড়ার উপক্রম হয়েছে শ্রমিকদেরও। চরম দুর্ভোগে রয়েছেন গত বন্যায় ঘর-বাড়ী হারানো নদ-নদীর তীরবর্তী মানুষেরা।
জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের কৃষক আমিন জানান, আমার জীবনে আমি এমন ঠান্ডা দেখি নাই। হাত-পা বরফ হয়ে আসে। আমরা কাজে যেতে পারছি না। গরম কাপড়তো নাই সেই সাথে কাজ করতে না পারায় ঘরের খাবারও শেষ হয়ে গেছে।
এদিকে জেলা প্রশাসন থেকে ৫৭ হাজার কম্বল বিতরন করা হলেও তা ভাগ্যে জুটছে না অনেক হত দরিদ্র পরিবারের। ফলে গরম কাপড়ের অভাবে দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে তাদের।
জেলা প্রশাসনের ত্রান শাখা সুত্রে জানা গেছে, সরকারীভাবে এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজার কম্বল ৯ উপজেলায় বিতরন করা হয়েছে। আরো ৫ হাজার কম্বল বিতরন প্রক্রিয়ায় আছে। নতুন করে আরো ৫০ হাজার কম্বল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।