কাউনিয়ায় স্কুল মাঠে হাট!


মিজান,কাউনিয়া প্রতিনিধিঃ রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ হাট-বাজারের দখলে থাকায় ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা আর উদ্বিগ্ন অভিভাবকবৃন্দ। রয়েছে সরকারী নীতিমালা কিন্তু তার কোনো বাস্তবায়ন দৃশ্যমান নয়। কোথাও জোর করে এসব হাট-বাজার বসানো হয়েছে, নয়তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে অবৈধভাবে ইজারা নিয়েছে। এতে যেমন বিঘ্ন ঘটছে শিক্ষা ক্ষেত্রে, তেমনি ভাবে দূষিত করছে শিক্ষার পরিবেশ। আর দেখভালের দায়িত্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করছে। এর ফলে একদিকে সরকার শিক্ষা খাতে সব্বোর্চ গুরুত্বদিয়ে কাজ করে এগিয়ে যাচ্ছে আর অন্যদিকে অর্থলোভী কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি নিজের স্বার্থে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে হাট-বাজার বসিয়ে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
সরেজমিনে দেখাগেছে, উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নে কারবালা মাদ্রাসা মাঠে টেপামধুপুর হাট ও ভায়ার হাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বুড়ির হাট, বালাপাড়া ইউনিয়নে মোফাজ্জল হোসেন মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তকিপল হাট, শহীদবাগ ইউনিয়নে শহীদবাগ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শহীদবাগ হাট, কূর্শা ইউনিয়নে ধর্মেশ্বর-মহেশা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মীরবাগ হাট, হারাগাছ ইউনিয়নে ইমামগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে খানসামার হাট। এছাড়াও হারাগাছ পৌরসভাসহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে গড়ে উঠছে গরু-ছাগলসহ নানা রকম পন্যের হাট-বাজার।
স্থানীয়রা জানায়, গবাদিপশু ব্যবসায়ীসহ নানা পণ্য বিক্রেতা স্কুল ছুটি না হতেই গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী, ধান, গম, ভুট্টা, বাদাম, পাট, বাঁশ, চারাগাছ, খড় ইত্যাদি নিয়ে এসব বিদ্যালয়ের মাঠে ঢুকে পড়েন। মাঠ ছাড়াও তারা ব্যবহার করছে বিদ্যালয়ের বারান্দা ও পিলার। ব্যবসায়ী কর্তৃক কোনো কোনো বিদ্যালয়ের রুম ভাড়া নিয়ে সেখানেই পণ্য ক্রয়-বিক্রয় এবং ট্রাকে বা পি-কাপ ভ্যানে লোড-আনলোড করছে। শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য ক্রীড়ার বিকল্প নেই কিন্তু উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো হাট-বাজারের দখলে থাকায় খেলা-ধুলা করতে পারছেনা কোমলমতি শিশুরা।
এবিষয়ে কথা বললো ইমামগঞ্জ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেল, আব্দুল করিম ও আফসানা তারা জানায়, হাট বসায় স্কুল মাঠে আমরা খেলা-ধুলা করতে পারি না। দয়া করে আমাদের স্কুল মাঠ খেলার উপযোগী করার ব্যবস্থা নিন। এব্যাপারে মোফাজ্জল হোসেন মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইনানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাট-বাজার বসার নিয়ম নাই। বিষয়টি একাধিকবার সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এতে পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে তাই আমিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ রক্ষার্থে হাট-বাজার চাই না। অপরদিকে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম নাজিয়া সুলতানা জানান, গত মাসের আইন-শৃংখলা ও উপজেলা পরিষদের সভায় (২৮ আগষ্ট) সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের স্কুল মাঠ থেকে হাট সরানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *