কাউনিয়ায় শতাধিক বাড়ি, দুইশ’ হেক্টর ফসলি জমি তিস্তা গর্ভে বিলীন

মিজান, কাউনিয়া প্রতিনিধি: রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নে তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে ৬ গ্রামের প্রায় শতাধিক বাড়ি ভিটাসহ প্রায় ২শ’ হেক্টর ফসলী জমি ইতো মধ্যে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গন রোধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় আতংকে দিন কাটাচ্ছে নদী তীরবর্তী মানুষেরা।

সরেজমিনে বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নের ঢুসমারা, তালুকশাহবাজ, হরিচরনশর্মা, চরগনাই, বিশ্বনাথ, হয়বতখাঁ গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে প্রায় শতাধিক বাড়ি ও ২শ’ হেক্টর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বালাপাড়া ইউনিয়নে তালুকশাহবাজ গ্রামে ইতিমধ্যে গোপাল, হরেকান্ত, নিমাই, অর্জুন চন্দ্র, ইন্দ্রজিত, কাজল, ভূষন, সুমন, প্রেমেশ্বর,সচীন চন্দ্র, বেনুবালা, মধুবালা, মংলু রাম, জিতেন্দ্র, বিরেন্দ্র নাথ, সুবল, গোপাল, মাহু মোফাসেল, মামুনুর রশীদ, ফারুক, মোজাফ্ফর, মালেকা, বিজবালার বাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়েগেছে। গত বছর এই এলাকার আরও শতাধিক বাড়ী গিলে খেয়েছে তিস্তা নদী। টেপামধুপুর ইউনিয়নের ইমান আলী, জয়নাল,্ আজগর, আনোয়ার, নিয়াজ আলী, জব্বার, জহুরুল, সাহিদুল, বক্কর, রতিকুল, মতিন,নুর ইসলাম, মন্টু, মোরশেদ ও সফি আলম এর বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েগেছে। গত বছর এই ইউনিয়নের আরও ২ শতাধিক বাড়ী গিলে খেয়েছে তিস্তা নদী।

বালাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান তার এলাকায় প্রায় অর্ধশতাাধিক বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে, ভাঙ্গন কবলিত লোকজনের তালিকা উপজেলা পরিষদে জমা দিয়েছি। টেপামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, তার এলাকায় অর্ধ শতাধিক বাড়ি-ঘর ও ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েগেছে। তালিকা পরিষদে দেয়া হয়েছে। নদী ভাঙ্গনের শিকার গোপাল চন্দ্র জানান ইতি মধ্যে তিস্তা নদী ভাঙ্গনে সুভাঘাট নামের একটি গ্রাম কাউনিয়ার মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেলেও নদী ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করায় আরও প্রায় ১১টি গ্রাম,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার,ঈদগাঁও মাঠ হুমকির মধ্যে রয়েছে।

নদী ভাঙ্গন রোধে এলাকার মানুষ তিস্তা সড়ক সেতু থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত গার্ড ব্যাঙ্ক নির্মাণের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুন্শি এমপি কে বহুবার আবেদন নিবেদন ও মানব বন্ধন করেও কোন কাজ হয়নি। নদী ভাঙ্গন রোধে এখনই ব্যবস্থা গ্রহন না করলে উপজেলার ১১টি গ্রাম তিস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে এলাকাবাসী আশংকা করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম নাজিয়া সুলতানা জানান, তিনি নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে চেয়ারম্যান সাহেবদের তালিকা তৈরি করে তার দপ্তরে জমা দিতে বলেছেন। এই তালিকা জেলায়ও পাঠান হবে। ইতো মধ্যে ৩৫টি পরিবারকে দেড়বান করে টিন নগদ ৫হাজার টাকা ও শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।এছাড়াও নদী ভাঙ্গনে স্থায়ী সমাধানের জন্য মাননীয় সংসদ সদস্যর সাথে কথা বলে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানান।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *