কাউনিয়ায় যত্রতত্র পশু জবাই ও বিক্রির হিড়িক
কাউনিয়া প্রতিনিধি: রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা সদরসহ সর্বত্র ডাক্তারি ফিটনেস সনদ ছাড়াই পুরোদমে চলছে রোগাক্রান্ত পশু জবাইয়ের হিড়িক। এতে ক্রেতারা দারুন ভাবে প্রতারিত হচ্ছে। যত্রতত্র পশু জবাই করে দূষিত করে তোলা হচ্ছে সেখানকার পরিবেশ। ‘যত্রতত্র পশু জবাই করা যাবে না’- এব্যাপারে সরকারি গেজেট হলেও এ আইন মানছে না ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে বিভিন্ন হাট বাজারে ও পাড়া-মহল্লার যেখানে সেখানে ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই রোগাক্রান্ত গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ জবাই করে দেদারসে বিক্রি করা হচ্ছে। বড় ক’টি হাট-বাজারে কসাইখানা থাকার পরেও যত্রতত্র নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এসব গবাদী পশু জবাই করা হচ্ছে। কোনো কোনো সময় কসাইরা সড়কের ওপর জবাই করে সেখানেই বিক্রি করে গবাদি পশুর মাংস। এমনকি অসাধু অর্থলোভী কসাইরা মাঝে মাঝে মাইকিং করে চমকপ্রদ কথা দিয়ে ক্রেতাদের ফাঁদে ফেলছে। ফলে একদিকে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ক্রেতা সাধারণ, অন্যদিকে রক্ত ও মল থেকে নানা রোগ বালাইর জীবানু ছড়িয়ে দুষিত করছে পরিবেশ।
সরেজমিনে দেখা গেছে উপজেলার হারাগাছ পৌরসভাসহ টেপামধুপুর, শহীদবাগ, কূর্শা, হারাগাছ, সারাই ও বালাপাড়া ইউনিয়নের ছোট বড় সবকটি হাট-বাজার ছাড়াও যত্রতত্র প্রতিদিন কসাইরা পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করে। অধিকাংশ কসাইরা অসুস্থ ও রোগাক্রান্ত পশু লোকচক্ষুর অন্তরালে ভোরের অন্ধকারে জবাই আর সকালে বস্তাভর্তি মাংস বাজারে নিয়ে ফ্রেশ মাংস বলে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে আর্থিক ফায়দা লুটে নিচ্ছে। পশু জবাইয়ের আগে প্রত্যেকটি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্ব প্রাণী সম্পদ অফিস কর্তৃক দেখভাল করার কথা থাকলেও তা করা হয় না। নাকি করতে চায় না সে প্রশ্ন জনমনে। জানা গেছে, আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কসাইরা। অথচ বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থাপিত হলেও এর প্রতিকার দৃর্শ্যমান নয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোঃ রহমতউননবী বলেন, এ সংক্রান্ত আইন আছে কিন্তু লোকবলের সংকট ও তাৎক্ষণিক প্রশাসনিক সহযোগিতার অভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, অত্র উপজেলায় কসাইদের নিবন্ধনের আওতায় নেয়ার একটি পরিকল্পনা আছে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এর সাথে তিনি জানান, অবশ্যই উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস কর্তৃক ডাক্তারি পরীক্ষা ব্যতীত হাট-বাজারে কোনো পশু জবাই করা যাবে না। যত্রতত্র এসব পশু জবাই ও বিক্রির কারনে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের পাশাপাশি রোগ-জীবাণু ছড়াচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। যথাযথ পদক্ষেপের লক্ষ্যে আগামী আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এবিষয়ে আবারো গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হবে।