রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হেযবুত তওহীদের বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত
আমিরুল ইসলাম, রংপুর: রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী জনসচেতনতামূলক এক আলোচনা সভা করেছে রংপুর জেলা হেযবুত তওহীদ। যাবতীয় অন্যায়-অশান্তি দূর করে শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী চলমান হেযবুত তওহীদের নিঃস্বার্থ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সোমবার বেলা ২ঘটিকায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচকের বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।
এতে সভাপতিত্ব করেন হেযবুত তওহীদের রংপুর জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস শামীম। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঙ্গাচড়া উপজেলা শাখার আহবায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. রুহুল আমীন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেতগাড়ী ইউনিয়ন শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোহাইমিন ইসলাম মারুফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ অনলাইন মিডিয়া এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং জেটিভি অনলাইনের চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান, বেতগাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান মানিক, বেতগাড়ী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. চাঁদ সরকার, গঙ্গাচড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. জোনায়েদ চৌধুরী, আবু সালেক সরকার, মো. নুরুজ্জামান নয়া, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আশেক মাহমুদ, বেতাগাড়ী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন প্রামানিক, গঙ্গচড়া উপজেলার বিশিষ্ট রাজনীতিবীদ ও সমাজসেবক মাসুদার রহমান সরকার (কাঞ্চন), গঙ্গাচড়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও দৈনিক বজ্রশক্তি ও জেটিভি নিউজের গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রতিনিধি কামরুজ্জামান লিটন, গঙ্গাচড়া উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক শফিয়ার রহমান স্বপন, গঙ্গাচড়া উপজেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি শহিদুল ইসালাম, জাতীয় ছাত্র সমাজ গঙ্গাচড়া উপজেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আবু সুফিয়ান (রিগান)।
প্রধান অতিথি হেযবুত তওহীদের কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, সারাদেশের ন্যায় হেযবুত তওহীদ আমার উপজেলায় কয়েক বছর যাবত নিঃস্বার্থভাবে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে জনগণকে বিভিন্ন উপায়ে সচেতন করে যাচ্ছে যা বিপদগামী তরুণ ও যুবসমাজকে সঠিক পথ নির্দেশ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমন্ত্রীত অতিথি তার বক্তব্যে হেযবুত তওহীদের কার্যক্রমকে ‘সময়োপযোগী’ বলে উল্লেখ করেন।
মুখ্য আলোচক তার বক্তব্যে বলেন, ‘জঙ্গিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদকে যারা খাটো করে দেখবেন, অন্য আর দশটা ইস্যুর সাথে গুলিয়ে ফেলবেন তাদেরকে পরবর্তীতে আফসোস করতে হবে। এটা নিঃসন্দেহে সবচাইতে গুরুতর সঙ্কট।’ হেযবুত তওহীদের এমাম বলেন, ‘আমরা যখন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আলোচনা করি তখন কেউ কেউ বলেন, এখন তো দেশে জঙ্গিবাদ নাই। তাহলে জঙ্গিবাদ নিয়ে আপনারা এত কথা বলেন কেন? এখন অন্য ইস্যু নিয়ে বলুন। চাল-ডালের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কথা বলুন, তেল গ্যাস বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলুন, নির্বাচন নিয়ে বলুন। আসলে তারা জঙ্গিবাদের ভয়াবহতা বোঝেন নি। কোনটার গুরুত্ব আগে কোনটা পরে- এই সাধারণ জ্ঞান তাদের নেই।’ তিনি জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সম্প্রতি চাল-ডালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পৃথিবীর কয়টা দেশ ধ্বংস হয়েছে আর জঙ্গিবাদের কারণে কয়টা দেশ ধ্বংস হয়েছে হিসাব করেছেন? জঙ্গিবাদ হচ্ছে সেই ইস্যু যেটা নিয়ে আজকে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে আগুন জ্বলছে, জঙ্গিবাদ সেই ইস্যু যার কারণে একটার পর একটা মুসলিমপ্রধান দেশ গণকবরে পরিণত হচ্ছে, জঙ্গিবাদ সেই ইস্যু যার রেশ ধরে কোটি কোটি মানুষ গৃহহারা উদ্বাস্তু হচ্ছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ নো-ম্যান্স ল্যান্ডে বসবাস করছে, সমুদ্রে ভাসছে হাজার হাজার লাশ।’
হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘দৈনিক বজ্রশক্তির আজকের পত্রিকায় একটি খবর এসেছে, মুসলিমবিদ্বেষী একটি উড়োচিঠিতে যুক্তরাজ্যে আতঙ্ক! বেনামি একটি চিঠিতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ প্রচার করা হয়েছে। অনেকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির আশায় ইউরোপে যান। পশ্চিমা দেশগুলোকে মনে করা হয় সভ্য দেশ, যেথায় জাতিভেদ নাই, বর্ণভেদ নাই, ধর্মভেদ নাই। কিন্তু এখন কী দেখা যাচ্ছে? মুসলমানদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ প্রোপাগান্ডা চলছে সেখানেও, মুসলমান দেখলেই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানানো হচ্ছে। গত সপ্তাহে শৃলংকাতেও একই চিত্র দেখলাম। দেশটাতে ভয়াবহ মুসলিমবিদ্বেষ মাথাচাড়া দেওয়ায় সান্ধ্য আইন জারি করতে হয়েছে। আর পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারের কথা তো সবারই জানা। দেখা যাচ্ছে সারা পৃথিবীতেই মুসলমানদেরকে ধ্বংস করার এক উন্মত্ত তাÐবলীলা শুরু হয়েছে। কোথাও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা, কোথাও ইহুদি সন্ত্রাসীরা, কোথাও খ্রিস্টান সন্ত্রাসীরা, কোথাওবা মুসলমানরাই ধ্বংস করে চলেছে মুসলিম জাতিকে।’